Wednesday 10 May 2017

About Arafat kram Shanto (Arafat Ibne Ikram Shanto)

About Arafat Ikram Shanto
About Arafat Ikram Shanto

Full Name: Arafat Ibne Ikram (Shanto)

যদিও দু-চারটা লাইন পড়ে কোনো মানুষকে বুজা যায় না, তবুও সে লিখছে…… ... 
Muhammad Arafat Ibne Ikramul Haque Shanto was born in 1996 26th April, 5:35am Friday. 

He was one of the most Cute & Luckiest baby in this world since birth! ^_^ 

সে কম কথা বলত আর চুপচাপ থাকত তাই তার নাম রাখা হয়েছিল "শান্ত"। 
কিন্তু বর্তমানে তা নিপাতনে সিদ্ধ। 
হুম…সত্যিই সে শান্ত স্বভাবেরই মানুষ, অতি সাধারন এক মানুষ, সবসময় বাস্তবতা নিয়ে ভাবে!!! 

He has nothing special; just a common man with common thoughts 
and He've led a common life. 

সে এতটাই সাধারন যে সাধারনের সঙ্গাটাই তার কাছে অসাধারন বলে মনে হয়......! 

তার আশা ছিল পৃথিবীর সবচে চালাক ছেলেটিকে হত্যা করার, কিন্তু পরে শুনল আত্মহত্যা করা মহাপাপ। :

সে কাউকে নিজের মাঝে নকল করতে চায় না। সে অনুকরণ না, অনুসরণ করতে চায় সকল মহাপুরুষদের। সে নিজেকে কখনই বড় ভাবে না। 
কারন সবচে  উজ্জ্বল নক্ষত্রটিও জ্বলতে জ্বলতে একদিন নিভে যাবেই। …………………………............…

Wednesday 12 February 2014

ব্লু ফ্লীম,বাংলায় যাকে বলা হয় নীল ছবি।

ব্লু ফ্লীম,বাংলায় যাকে বলা হয় নীল ছবি। 
হলুদ ট্যাক্সি ক্যাবটা বাড়িটা পাশে এসে অপেক্ষা কৃত অন্ধকার জায়গাটায় দাঁড়ায়। বাড়ি টার তিন তালায় বাম পাশের ঘরে লাইট জ্বলছে, হিসেবে ভুল না হলে ওটা মিরার রুম হবার কথা, অনুপ
সামান্য অস্বস্তি নিয়ে হাত ঘরিটার দিকে তাকায়, রাত দুটা বাজতে পনের মিনিট বাকি,

ব্লু ফ্লীম,বাংলায় যাকে বলা হয় নীল ছবি। 

ব্লু ফ্লীম,বাংলায় যাকে বলা হয় নীল ছবি।
ব্লু ফ্লীম,বাংলায় যাকে বলা হয় নীল ছবি। 



এরপর সামান্য সতর্ক ভাবে এদিক ওদিক দেখেনেয়, নাহ কোথা কেউ নেই। ক্যাবের ড্রাইভার সামান্য উস্খুস করে, তার পান খাওয়া দাঁত বের করে বলে, ভাইজান একটা কথা বলি?
অনুপ সংক্ষেপে বলে, “বলো”।
- ভাইজান আমি ছিন্তাই কারি দের সাথে কাজ করছি তিন মাস, তহন এত থ্রিল পাইনা আজকে যা পাইতেছি, খুব মজা পাইতাছি ভাইজান, ভাইজান থ্যাংকইউ আমারে এই কাজে আনার জন্য।
অনুপ ড্রাইভারের কথায় তেমন একটা কান দেয়না, ও তাকিয়ে থাকে তিন তালার জানালার দিকে ।
ড্রাইভারের কাছে জানতে চায়- “এ সি আছে?”
- জ্বি ভাইজান, এ সি চলতেছে। ভাইজান তো খুব ঘামতেছেন, চিন্তা লাগতেছে, চিন্তার কিছু নাই।
ভাইজান মুখ হা কইরা শ্বাস নেন চিন্তা কম লাগবে। অনুপ কিছু বলেনা তবে সামান্য মুখ হা করে শ্বাস নেয়, এতে তার চিন্তা কমেনা আরো বেড়ে যায়।

দুটা বেজে যাচ্ছে প্রায়।
-ভাইজান অনুমতি দিলে আর একটা কথা জানতে চাই।
অনুপ সামান্য বিরক্তি নিয়ে তাকায়।
- ভাইজান এইটাই লাষ্ট।
অনুপ মাথা নাড়ে।
- ভাইজান মেয়ের বাবার কি দোনালা বন্দুক আছে? না মানে বাংলা সিনামায় দেখছিতো, মেয়েরে নায়ক ভাগায়ে নিয়ে যাচ্ছে, আর মেয়ে বাবা চৈত্র মাসের গরমের মধ্যে চাদর গায়ে দোনালা বন্দুক হাতে ছুটল মেয়েকে ছিনিয়ে আনতে।
এবার অনুপের একটু মজা লাগে বলে,-
মিরা নাকি আর একবার পালাতে চেয়েছিলো বাড়ি ছেড়ে। তখন ওর বাবা নাকি ওদের বাড়ির সবচেয়ে বড় কুকুরটা ছেড়ে দিয়ে ছিল যে ট্যাক্সি ক্যাব ওয়ালা ওকে নিতে এসে ছিলো তার দিকে।

ড্রাইভার সামান্য সংকুচিত হয়ে বলে,
- ভাই জান আর একটা কথা এইটাই একেবারে লাস্ট, একে বারে শেষ।

অনুপ হেসে বলে, “বলো। ”
ভাইজান কি গাড়ি চালাইতে পারেন?
 ক্যানো?
- গাড়িটা থাকুক কালকে আপনে দিয়ে আইসেন,
আমি কুত্তা বড় ভয় পাই, আমার চাচারে কামর দিছিলো একবার, নাভির গোড়ায় চৈদ্দোটা ইনঞ্জেকশন দিছিল, উহ্ কি কষ্ট। এমন সময় বাড়ির সামনের লোহার গেটের পকেট গেটটা খুলে যায়, বোরকা পড়া কেউ একজন বের হয় গেট থেকে, হাতে একটা ব্যাগ, সে চুপি চুপি এগিয়ে আসে গাড়িটার দিকে, অনুপ অপলক চেয়ে থাকে মেয়েটার দিকে, গাড়ির কাছে এসে বলে, দরজা খোল, অনুপ দরজা খুলে দেয়, মেয়েটা টুপ করে গাড়িতে ওঠে ড্রাইভার কে ইশারা করতেই সে গাড়ি চালু দেয়। ড্রাইভার জানতে চায় আপা আপনাদের কুত্তা গুলার কি অবস্হা, ওরা সবাই ভালো আছে?
মিরা ততক্ষনে বোরকা খুলে ফেলেছে। অনুপ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে, ওর চুল গুলো খোলা, চেহারায়
কোন ভয়ের চিন্হ পর্যন্ত নেই। ওকে লাগছে পরীর মতন, এই মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে এক পাইলটের সাথে। আর আজ সে পালিয়ে যাচ্ছে অন্য এক ছেলের কাছে। অনুপ ভাবতে থাকে, সে ছোট বেলায় ভাবত পাইলট হবে। কত স্বপ্ন দেখেছে প্লেন নিয়ে সে উড়ছে। একবার মনে আছে তার সে স্বপ্নে উড়তে উড়তে খাট থেকে পড়ে গিয়ে ছিল। মিরার পালিয়ে যাওয়া দেখে এখন তার মনে হয় পাইলট না হয়ে ভালই হয়েছে, নাহলে হবু বৌ পালিয়ে যেত অন্য কারো সাথে।

কি দেখছিস অমন করে?
মিরার কথায় অনুপের ঘোর কাটে।
মিরা বলে, ড্রাইভার কি সব কুকুরের কথা জানতে চাচ্ছে?
অনুপ কিছু বলে না, সামান্য হেসে বলে ড্রাইভার জোরে চালাও।
গাড়ী বনানীর রাস্তা ছেড়ে কয়েকটা মোড় নিয়ে মেইন রোডে এসে পড়ে, গাড়ীর গতি বাড়তে থাকে ক্রমাগত। সেটা এগিয়ে চলে পুরান ঢাকার দিকে।

অনুপ জানতে চায় বোরকা পেলি কৈ?
- কাজের বুয়ার।
তোর বাবা-মা কৈ?
- ঘুমিয়ে গেছে।
কালকে সকালে কি অবস্থা  হবে ভেবেছিস?
- কিছুই হবেনা, মা একটু কাদবে, বাবা বুঝিয়ে বাঝিয়ে রাখবে, আর সবদিকে খোজ
লাগাবে। তাহলে তোর পালানোর দরকার কি ছিল? সোজা বলে দিলেই তো হতো।
- ও তুই বুঝবিনা।
বুঝবনা মানে? মেয়ে ভাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আর এটুকু বুঝবনা।
- তুই কি এখন আমার সাথে ঝগড়া করবি?
না ঝগড়া করব কেনো?
- তোর খুব কষ্ট হয়েছে নারে?
তোর তো কোন ঠিক নেই? রাত বারটায় মতলব হল,
ফোন করেই- অনুপ আমি পালাবো, তুই প্লান কর আমাকে কিভাবে বের করবি? বলেই তুই খালাস। আর আমি, অর্থহীন। কোন মানে হয়, বাবা মার কাছে একগাদা মিথ্যে বলতে হলো, সারাদিন কি করছিস? দুপুরে পালাতি, বিকেলে পালাতি, না রাজকুমারির রাত দুপুরে পালেতে হবে। বল এত
দেরি করলি কেন পালানোর সিদ্ধান্ত নিতে?
- ভেবেছি, সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, একবার ভেবে ছিলাম বাবা কে সব খুলে বলি। শেষে পালাবো ঠিক করলাম। আর অমনি তোকে ফোন করলাম, ঘুমিয়েছিলি?
অনুপ আর কিছুই বলেনা, চুপ করে থাকে। মিরা ট্যাক্সির গ্লাস নামিয়ে দেয়। বাতাসে ওর চুল গুলো উড়তে থাকে, মাঝে মাঝে উড়ন্ত চুল গুলো ওর মুখের উপর পড়ে, অনুপের খুব ইচ্ছা করে হাত দিয়ে মিরার চুলগুলো ওর মুখের উপর দিয়ে সরিয়ে দেয়, দেওয়া হয়না।



ট্যাক্সিটা পুরান ঢাকার একটা মেসের সামনে এসে দ্বাড়ায়, অনুপ নামে ট্যাক্সি থেকে। নেমে মেসের দিকে যেতে থাকে, মিরা পিছন থেকে বলে পাচ তালায় ডান পাশের রূম, দরজায়
নাম লেখা আছে “জাভেদ”। অনুপ ফিরে আসে কিছু ক্ষন পরে, মিরা আগ্রহ নিয়ে জানতে চায় পেয়েছিস জাভেদ কে?
অনুপ মাথা নেড়ে বলে না।
- ক্যানো ও কোথায়?
ওদের গ্রামের বাড়ীতে গেছে দুই দিন আগে,
আচ্ছা ও জানেনা যে তুই ঘর ছড়ে ওর
কাছে পালিয়ে আসছিস?
- মিরা মাথা নাড়ে বলে না, ভেবে ছিলাম ওকে একটা সারপ্রাইজ দেই, আর তা ছাড়া ওরতো মেসেই থাকার কথা। বাড়ীতে কেন গেলো কে জানে! কি করবি এখন?
- আমার কাছে ওর বাড়ীর ঠিকানা আছে, একবার ওর ডাইরি থেকে নিয়ে ছিলাম, ওকে না জানিয়ে।
তুই একা যাবি কিভাবে?
- একা যাবো মানে? তুই ও যাবি।
আমার কালকে জব্বার স্যারের একটা পরীক্ষা আছে। তোর মনে নেই? স্যার বলে ছিলেন যে এ্যাটেন্ট
না করবে তার সেমিস্টার লস করিয়ে দেবেন।
- তুই পারবি আমাকে ছেড়ে যেতে?
অনুপ সামান্য হেসে বলে, তুই তো যাচ্ছিস আমাকে ছেড়ে। বলতে বলতে গাড়িতে ওঠে।

ড্রাইভার এবার মুখ খোলে, ভাইজান, আপনে তাইলে ভিকটিম না।
- নারে ভাই আমি তোমার ভিকটিমনা ঘোড়ার ডিম কিছুই না, কালপ্রিট অন্য আর এক জন। তার পর
তুমি যাবে আমাদের সাথে আর, তোমাকে তো এই পর্যন্ত নিয়ে আসার কথা ছিলো।
- যাবনা মানে? আপনে আমার ভাড়া ঠিক করার সময় বললেন মেয়ে ভাগাইতে যাইবেন, তহন থেইকাই যা থ্রিল পাইতাছি। আমি রেডি খালি আওয়াজ দেন কৈ যাওন লাগবো? অনুপ সামান্য হেসে মিরার দিকে তাকায়।
মিরা বলে কমলা পুর ইষ্টিসন।
অনুপের সামান্য অবাক লাগে, ও জানতে চায়, তুই জাভেদের সাথে ফোনে যোগা যোগ না করে ঘর থেকে বের হলি কি ভাবে, আমি বুঝতে পারছিনা। তোর সাথে ওর শেষ কখন কথা হয়েছে?
- দুই দিন আগে।
এ ক দিন কথা বলিসনি ক্যানো?
- ওর মোবাইল বন্ধ পাচ্ছিলাম।
মেসে যোগা যোগ করিস নি ক্যানো?
- আরে বাবা মা যেভাবে ঐ পাইলট ব্যটাকে আমাকে দেখানোর জন্য বাড়ীতে এন্গেজ করে রেখেছডিলো, ওর সাথে দেখা করার সুযোগইতো হলোনা।
শেষ কি ব্যাপার নিয়ে কথা বলে ছিলি?
-বিয়ের কথা বলে ছিলাম ও বিয়ে করতে রাজি হয় নি।
মানে? তাহলে এখন যাচ্ছিস কৈ?
- আমি গিয়ে হাজির হলে ও না বলতে পারবেনা।
কি জানি ভাই, বলে অনুপ একটু অন্য মনস্ক হয়। ট্যাক্সিটা ধূত গতিতে যেতে থাকে কমলাপুরের দিকে, রাস্তা ঘাট , ফুটপাথ, ফুট পাথে ঘুমানো নর - নারী শিশু, ডাষ্টবিন একে একে পিছনে সরে যেতে থাকে।


অনুপ দাড়িয়ে আছে ইস্টিশনের সামনে, মিরার কাছ থেকে কিছু টা ফাকা রেখে, মিরা একটা চেয়ারে বসে আছে, ইস্টিশনের অস্বচ্ছ লাইটের অদ্ভুত আলোয় ওকে একটু ক্লান্ত দেখায়, অনুপ অপেক্ষা করতে থাকে ড্রাইভারের জন্য। কিছু ক্ষন পর ড্রাইভারকে দেখা যায়। সে খুব দ্রুত এগিয়ে আসে অনুপের দিকে, তার হাতে দুটো টিকিট, অনুপ একটু অবাক হয় এই লোক এত রাতে টিকিট
ম্যানেজ করলো কিভাবে?
ড্রাইভার এসে ‘ভাইজান যাত্রা শুভ হোক”
বলে টিকিট দুটো এগিয়ে দেয় অনুপের দিকে।
অনুপ জানতে চায় তুমি এতো রাতে টিকিট ম্যানেজ করলে কিভাবে?
- ভাইজান আমরা ম্যানেজ করতে পারি, পারতে হয়। নাইলে যে বদমাইস
দুনিয়া উস্টা দিয়া ফালায়ে দেয় মানুষ মানুষরে। তুমি আমাদের জন্য এত কিছু করছ কেন?
- ভাইজান আমি করতেছি আপনার জন্য,
আপনে মানুষটা ভালো, আপনে আপামনিরে ভালোবাসেন তার পরো তারে নিয়া যাইতাছেন অন্য একজনার কাছে, আজিব ভালবাসা ভাইজান আপনার।
তুমি বুঝলা কিভাবে?
- ভাইজান অল্প কিছু বিদ্যা পেটের মধ্যে আছে, এইট পর্যন্ত পরছি, কথায় আছেনা অল্প বিদ্যা ভংকারী। আমার হইছে সেই দসা।
তুমি ভংকর হইলেও মানুষটা ভালো।
-ভাইজান আমারে এইবার বিদায় দেন।
অনুপ ড্রাইভারের টাকা হিসেব করে দিয়ে দেয়। ড্রাইভার চলে যেতে যেতে আবার ঘুরে আশে,
ভাইজান একটা লাষ্ট কথা জানতে চাই,
একে বারে লাষ্ট।
- কি বলবে? বলো।
ভাইজান আফা মনি কি ছিনামায় অভিনয় করে?
আমার বার বার মনে হইতাছে ওনারে আমি কোথাও দেখছি, কোথায় ঠিক মনে করতে পারছিনা। তবে টিভিতে কোথাও দেখছি।
অনুপ এবার জোড়ে হেসে ওঠে। মিরা ইসারায়
জানতে চায়, কি হল? অনুপ হাসতে হাসতে মিরার কাছে যায়। গিয়ে বলে, ও জানতে চাচ্ছে তুই নাইকা টাইকা কিনা? মিরা বলে সব ছায়া ছবির অবদান, বুঝলি। ড্রাইভার চলে যায়।

ওরা অপেক্ষা করতে থাকে ট্রেনের জন্য। একসময় সমস্ত ইস্টিশন আলোকিত করে দিয়ে আন্তনগর ট্রেন এসে দ্বাড়ায়, নির্জন ইস্টিশনটা ভরে যায় অসংখ্য মানুষের ব্যাস্ততায়।
ওরা গিয়ে ট্রেনে ওঠে। কিরে মিরা কেমন লাগছে এখন?
খুব খুশি লাগছে না?
- খুশিতো একটু লাগছেই, খুব মজা পাচ্ছি,
কখনো ট্রেনে চড়িনিতো তাই। ভালই হল এখনতো মাঝে মাঝেই চড়া হবে।
- হ্যাঁ হবে হয়তো।
-অনুপ তুই কাউকে ভালো বাসলিনা ক্যানো বলতো?
বেসেছিতো।
-কাকে বলনা, তোর বৌ খুব শুখি হবে।
তাইনাকি?
- হ্যাঁ তুই খুব কেয়ারিং।
তাহলে আমাকে বিয়ে করে ফেল না।
- ধুর বোকা তাই কি হয় নাকি? তুই আমার বন্ধুনা!
হ্যা বন্ধুই তো।
-তোর কাছে সম্পাকে কেমন লাগে?
কোন সম্পর্ক?
-আরে মনে নেই ঐ যে, জাভেদের বন্ধুর বোন, যার সাথে দেখা করার জন্য জাভেদ ওর বন্ধুর সাথে প্রায়ই আশতো ক্যাম্পাসে।
- ভালইতো খারাপনা, ওরতো সবই আছে, দুটা চোখ, একটা নাক, একটা মুখ, চুল আরো যা যা থাকতে হয় মেয়েদের যেমন ধর……..।
- আচ্ছা আচ্ছা আর বলতে হবেনা। এবার বল, বিয়ে করবি নাকি ওকে?
জানিনা কি করবো, আগে তোকে তোর জাভেদের কাছে পৌছে দেই, তার পর ভাববো।
ভালো কথা জাভেদ যেত সম্পার জন্য, তুই ফাসালি কি ভাবে জাভেদকে?
- আমি ফাসালাম কোথায়? আমাকেই তো ফাসলো। আচ্ছা তুই কখনোই জাভেদর সাথে তেমন মিসতিনা, কিরে কি ব্যাপার খুব জেলাস ছিলি নাকি, জাভেদের উপর? বলে ভ্রু নাচলো মিরা।
ক্যানো ওর উপর জেলাস হবো ক্যানো?

আরে আছেনা, ক্যাম্পাসের বাইরের একটা ছেলে এসে তোদের মাল
বাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
এই তুই এ ধরনের অশ্লীল কথা শিখলি কোথায়?
- কোনটার কথা বলছিস?
এই যে বললি মাল। মাল আবার কিরে?
মেয়েরা আবার মাল হয় কিভাবে?
- জাভেদ খুব ব্যাবহার করে কথাটা, তাই আমারো অভ্যেস হয়ে গেছে হয়তো।

ওদের কথা আর তেমন আগায়না, ওরা আবারো অপেক্ষা করতে থাকে কখন ট্রেন
ছাড়বে?

এক সময় হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন ছাড়ে, ঝিক ঝিক শব্দে পেরিয়ে যেতে থাকে নগরের রাস্তা ঘাট, একসময় পিছনে পড়ে থাকে, ঢাকা নগর, নাগরিকত্ব, কোটি মানুষের স্বপ্নের শহর। আকাশে সুন্দর একটা চাঁদ উঠেছে, আকাশ ভর্তি অসংখ্য তারা,

অনুপ ছোট বেলায় পরা একটা ছড়া মনে করতে চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু মনে পড়ছেনা, তবে এতটুকু মনে আছে ছড়াটা ইংরেজীতে লেখা, তার বার বার রবার্ট ফ্রষ্টের একটা বিদঘুটে কবিতা মনে পড়ছে। কিন্তু ছোট বেলায় পরা সেই সহজ ছড়া টা মনে পরছেনা। একবার ভাবে মিরার কাছে জানতে চাইবে কিনা? চাওয়া হয়না,

মিরা ঘুমিয়ে গেছে, এসব ভাবনার ফাকে মাথার মধ্যে অবিকল সেই ছোট বেলার মতন সুর
করে বলে ওঠে,
টুইংকেল টুইংকেল লিটল ষ্টার।
হ্যাঁ মনে পড়েছে তার, সে তার সামনে ছোট বেলায় দেখা তার মাকে দেখতে পায়, মা চুল বাধছে আর
তাকে পড়াচ্ছে পড়ার ফাকে ফাকে বলেছে, বাবু পড়া লেখা করে তোমাকে অনেক বড় হতে হবে, ইস্ মা খুব কষ্ট পাবে ওর সেমিষ্টার লস হবে শুনলে।
বাবা কিছুই বলবেনা উল্টো মাকে বোঝাবে, আহ ছেলেটা অত রাতে মেয়েটা কে একা ফেলে চলে যাবে, স্রেফ একটা পরীক্ষা দেবার জন্য। পথে কত রকমের সমস্যা হতে পারত মেয়েটার। এর পর বাবা মায়ের কানের কাছে মুখ নিয়ে কিছু একটা বলবে, অমনি মা হেসে ফেলবে। মা উঠে ভাত বেড়ে দেবে, আর কপট অভিমান নিয়ে বলবে ,”আমার বীর পুত্র বড় একটা কাজ করছেন। তিনি মেয়ে ভাগিয়ে অন্যের হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন। আরে বাবা নিজে নিয়ে আসলেই হতো।

আমি একা একা এই ঘর আর কতো দেখবো? আমি বুড়িয়ে যাচ্ছি সে খেয়াল কারো আছে? তার
ভাবতে ভালো লাগে ঘটনা গুলো, এক সময় হঠাৎ ঘটনা গুলো উধাও হয়ে যেতে থাকে , সে তলিয়ে যেতে থাকে অঘোর ঘুমে।




- এই অনুপ, এই
অনুপ হকচকিয়ে যায় মিরার ডাকে।
- মিরা বমি করছে ট্রেনের জানালার বাইরে মাথা রেখে।
অনুপ সংকোচ নিয়ে মিরার ঘারে হাত রেখে জানতে চায়, কিরে কি হলো?
- বুঝলাম না হঠাৎ মাথা ঘুরিয়ে বমি আসলো।
অনুপ হেসে বলে শুনেছি, বাসে উঠলে মানুষের বমি করে। আর তুই ট্রেনেও করছিস।
- অনুপ আমার খুব ভয় করছে।
ক্যানো?
- যদি জাভেদ কে না পাই অথবা ও যদি আমাকে বিয়ে না করতে চায়। তখন কি করব আমি?
ভাবিসনা আমি আছি না।
- তুই কি করবি?
কি করব সেটা তখন দেখা যাবে।
- তুই আবার জাভেদকে মারিস টারিস না। তোর যা মাথা গরম, আমাকে টিজ করেছিলো বলে তুই আর বাবু মিলে লোকটাকে যেভাবে মেরছিলি। বাপরে! আমি কিন্তু জাভেদ কে খুব ভালোবাসি, খুব।
অনুপ বলতে চায় আমিও তোকে খুব ভালোবাসি মিরা। মা বলেছিলো তোকে একদিন
বাসায় নিয়ে যেতে, আমি কিভাবে নিয়ে যাবো তোকে আমার বাসায়। তোর তখন সময় কৈ? তুই তখন ব্যাস্ত ছিলি জাভেদের মেসে যাওয়া নিয়ে। তোর মনে আছে তোকে একদিন বলে ছিলাম, আমার সাথে বাসায় যেতে তুই রাজিও হয়েছিলি কিন্তু জাভেদ কোথা থেকে হোন্ডায় করে এসে তোকে নিয়ে গিয়ে ছিলো, আর একদিন যবো বলে তুই চলে গিয়ে ছিলি হোন্ডার পিছনে চড়ে।
তোর তো আবার হোন্ডা খুব পছন্দ, জাভেদ কে ভালবাসিস শুনেও মা তোর জন্য নুডুলস
রেধেছিলো সেদিন। আমিই মাকে বলে ছিলাম তুই
নুডুলস খুব পছন্দ করিস। কিন্ত না এসব কিছুই
বলা হয়না মিরা কে।

অনুপ নিজের উপর বিরক্ত হয় কেন সে কোন দিনই তার ভালো বাসার কথা বলতে পারলোনা।
ও মিরাকে বলে, ভুল হয়ে গেছেরে মিরা।
-কি?
বাবুকে একটু জানিয়ে আসা উচিৎ ছিলো।
-হ্যাঁ তুই আর বাবুতো মানি জোড়,
ঐটা যা পিচকা না! মিরা হাসতে থাকে বাবুর কথা মনে করে, এমন সময় মিরার আবার খারাপ
লাগতে থাকে। তার আবারো বমি আসে সে বমি করে ট্রেনের জানালার বাহিরে মাথা রেখে। অনুপ কিছু বলেনা, চেয়ে থাকে মিরার দিকে। মিরা কেবল একবার বলে আমাকে একটু ধরনা অনুপ, আমি পরে যাচ্ছি…………..।


মিরার জ্ঞান ফের কুলি হকারের হাক ডাকে, সে চোখ খুলে এদিক ওদিক তাকায়, দেখে অনুপ বসে আছে তার দিকে তাকিয়ে।
অনুপ বলে কিরে এখন কেমন লাগছে?
-হ্যাঁ ভালো। তবে মাথাটা কেমন যেন ঘুরছে। ও কিছুনা। চল তোর স্টেশন এসে গেছে। মিরা জানালা দিয়ে বাহিরে তাকায়, বাহিরে রোদ উঠেছে, প্লাটফর্মের গায়ে লেখা রুপপূর ইষ্টিসন। হ্যা এই নামটাই
লেখা ছিলো জাভেদের ডাইরীতে। ও ঠিকানাটা বের করে, অনুপ জানতে চায় কোথায় যেতে হবে? মিরা ঠিকানাটার দিকে তাকিয় বলে তালুকদার বাড়ী।

ওরা নামে ট্রেন থেকে, অনুপ একটু সামনে গিয়ে একটা রিক্সা ঠিক করে, মিরাকে নিয়ে রিক্সায় ওঠে।
রিক্সা চলতে থাকে মাঠ-ঘাট, দোকান-পাট পিছনে ফেলে। অনুপ মিরার দিকে তাকায় ওকে একটু
ক্লান্ত লাগলেও সকালের অদ্ভুত হলুদ আলোয় ওকে লাগছে বৌ বৌ। ও মাথায় ওড়না দিয়ে ঘোমটার মতন দিয়ে আছে। অনুপ মিরাকে বলে তুই তো দেখি একে বারে বৌ সেজে বসে আছিস।
- বৌ সাজবনা, আমার শ্বশুর বাড়ীর এলাকানা।
তুই জাভেদকে পেয়ে প্রথম কি করবি?
- সম্ভব হলে ওকে জড়িয়ে ধরব, তার পর ওর কানে কানে একটা খবর দিব।
কি খবর?
- তোকে বলা যাবেনা।
ঠিক আছে ভাই আমি আর কত ক্ষন? তুই তোর জাভেদ কে যা মনে আসে বল। তবে আমাকে একটু
আগে ছেড়ে দিস, দেখি বাসে টাসে গিয়ে পরীক্ষাটা এ্যাটেন্ট
করা যায় কিনা?
-আরে যাহ আমার শ্বশুর বাড়িতে তুই প্রথম এলি, তোকে নাখাইয়ে ছাড়ি কিভাবে বল?
এমন সময় রিক্সাওয়ালা মাথা ঘুড়িয়ে বলে,
“নামেন এইটাই তালুকদার বাড়ি।”
ওরা নামে রিক্সাথেকে। মিরা বাড়ির সামমনের কাঠের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢোকে, অনুপ ও যায়
পিছন পিছন,

- কার কাছে আসছেন আপনারা? - উঠনের এক কোনা থেকে একজন মহিলা জানতে চায় ওদের কাছে।

অনুপ ঘুরে মহিলার দিকে তাকায়, ও জানতে চায় -এটা কি জাভেদ দের বাড়ি?

- হ্যা, কিন্তু আপনার কারা, কোথা থেকে আসছেন?
জ্বি আমারা ঢাকা থেকে আসছি।
- কি ব্যাপার বলেন?
জাভেদ কি বাড়িতে আছে?
- না সে বাড়িতে থাকবে কোথা থেকে? সে তো গত কাল আমেরিকা গেছে। মিরা বলে আমেরিকা গেছে মানে?
- আমিরিকা গেছে মানে, আমেরিকা গেছে। পরশু এসে গতকাল চলে গেছে। বলেছে ডিভি লটারী পাইছে। জাভেদ আপনার কি হয়?
-আমার স্বামী।
বলেন কি?
- বলেন কি মানে? সে আমার স্বামী হয়, কবুল বলা স্বামী।
অনুপ দেখতে পায় মহিলা রেগে যাচ্ছে, সে সামান্য অস্বস্তি নিয়ে বলে, না মানে জাভেদ কখনো বলেনিতো তাই, আচ্ছা ঠিক আছে আমরা চলি।

অনুপ মিরার দিকে তাকায়, তার চোখে জ্বল, সে মাথায় হাত দিয়ে দ্বাড়িয়ে আছে। এর পর সে আবার বমি করার জন্য মুখে হাত দেয়, অনুপ কিছু একটা বুঝতে পারছে তবে সে বিশ্বাস করতে চাচ্ছেনা। সে তার জীবন থেকে এই সময় টুকু মুছে ফেলতে চাচ্ছে, সে ভাবতে পারছেনা অচেনা এক গ্রামে এখন সে কি করবে? মিরা আবারো বমি করতে থাকে উঠানের এক কোনায়
দ্বাড়িয়ে, এক সময় ও টলে পড়ে যেতে থাকে, অনুপ এবার ওকে জড়িয়ে ধরে,

মিরা অস্ফুট স্বরে বলে,
অনুপ আমি প্রেগনেন্ট….অনুঊঊপ…। মিরা জ্ঞান হারায়। মহিলা কিছুই বলেনা কেবল
দাড়িয়ে থাকে কোমরে হাত দিয়ে, এমন সময় অনুপেরে মোবাইল ফোন টা বেজে ওঠে, অনুপ কল
রিসিভ করে,
হ্যালো।
-কে অনুপ?
হ্যাঁ বাবু বল।
-দোস্ত তুই কৈ?
ক্যানো?
-দোস্ত খুব খারপ খবর আছে।
কি হইছে?
-সর্বনাস হয়ে গেছে।
আরে বলনা কি হইছে?
- দোস্ত আমি বলতে পারবোনা আমার খুব খারপ
লাগছে।
বলবিত কি হইছে?
- দোস্ত মিরার পর্ন ভিডিও বাইর হইছে।
বলিস কি?
- হ্যা নেটের মাধ্যমে সারা দেশ ছেয়ে গেছে,
এদিকে মিরাকেও পাওয়া যাচ্ছেনা।
ছেলেটাকে চিনেছিস?
- হ্যা।
কে?
-জাভেদ, আমরা গিয়ে ছিলাম ওর মেসে, সব জায়গায় খুজেছি, পাইনি।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
ঠিক আছে মানে, তুই কৈ? তারা তারি আয়। আসছি, আমি একটু ঢাকার বাইরে। বলে কলটা কেটে দেয়। অনুপের চোখ বেয়ে পড়তে থাকে জ্বল, সে তাকিয়ে থাকে মিরার দিকে, মিরা অনুপের
কোলে মাথা রেখে মাটিতে পরে আছে। ওর মুখটা কত পবিত্র, এই মুখের সাথে কিভাবে মানুষ
প্রতারনা করে? অনুপ বুঝতে পারেনা, তবে এতটুকু বুঝতে পারে, কেন ট্যাক্সি ড্রাইভার বলে ছিলো মিরা কে তার চেনা চেনা লাগছে, কেনো মিরা শেষ মুহুর্তে পালানোর সিদ্বান্ত নিল, ক্যানো ও বমি করছে, ও তাকিয়ে থাকে মিরার মুখের দিকে, মিরা কি জানে ওর কষ্ট এখন অন্যে কাছে তামাসা, ওর স্বপ্ন অন্যের কাছে বাজার, ওর অনুভুতি এখন নিলাম হয়ে গেছে, ওর সিৎকার চিৎকারের শব্দ এখন কাপায় হাজার নোংরা চোখ কে। ওর বিবস্ত্র দেহের দিকে মানুষ রূপি হায়নার লোভাতুর দৃষ্টি, ওর সকল লজ্জা, শরম বিক্রি হয়ে গেছে নীল ছবির বাজারের নিষিদ্ধ গলিতে।

অনুপ মিরাকে সেই বোরকাটা পরিয়ে নিয়ে যায় মিরাদের বাড়িতে।
মিরা মা খুব কেদে ছিলো। অবশেষে অনুপ বিয়ে করে মিরাকে। বিয়েটা খুব গোপনে হয়।
অনুপের মা বিয়ের দিন মিরাকে নুডুলস রান্না করে খাইয়ে ছিলো। অনুপের বাবা বার বার
বলে ছিলো ব্যাটারে তুই বড়ই পুন্যের কাজ করলি, বড়ই পুন্যের কাজ করলি ব্যাটা, আমি পারতামনা তুই যা পারলি। বিয়ের কিছু দিন পর অনুপরা লন্ডনে চলে যায়, এক প্রকার পালিয়েই আসে ওরা। বাবুটা এয়ারপর্টে খুব কেদে ছিলো। লন্ডনে যাবার পর মিরা বহু বার চেয়েছিলো এম, আর করাতে। অনুপ চায়নি, জাভেদের বাচ্চাটেকে হত্যা করতে। বার বার বলেছে বাচ্চাটার কি দোষ? বাচ্চাটা জন্ম দেয় মিরা এক প্রকার বাধ্য হয়েই, ওর একটা মেয়ে হয়। জাভেদ কে আর খুঁজে পায়নি ওরা, তাই সে কোন দিন জানতে পারে না তার একটা মেয়ে আছে পৃথীবিতে। এর ও কিছু দিন পর মিরার একটা ছেলে হয়। ছেলেটা দেখতে অনুপের মতন হয়েছে, সে সব সব কিছুই বাবার মতন করতেই চেষ্টা করে, বাচ্চা দুটা বড় হতে থাকে লন্ডনের মাটিতে, হঠাৎ করে মেয়েটা বখে যেতে থাকে, অনুপরা বহু
চেষ্টা করে মেয়েটাকে ফেরাতে, সে ফেরে না, সে ডান্স ক্লবে যায়, বয়ফ্রেন্ডের সাথে লংড্রাইভে যায়, লিভটুগেদার তার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। একদিন সে চলে যায় মিরাদের বাড়ী ছেড়ে।
এর কিছু দিন পর লন্ডনের পর্ন বাজারে নতুন একটা ভিডিও আসে, যার কভার পেইজে সেই মেয়েটার নগ্ন ফটো দেখা যায়, লন্ডনে ইংরেজী তে সেই ভিডিও টাকে বলে ব্লু ফ্লিম। আর বাংলায় আমরা যেটাকে বলি নীল ছবি।